ক্ষমতার আসনে বসে কিংস পার্টি করলে বাংলার মানুষ মেনে নেবে না: ফজলুর রহমান

- আপডেট সময় : ১২:৪৯:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ১৭ বার পড়া হয়েছে
মোখলেছুর রহমান, গৌরীপুর প্রতিদিন : ময়মনসিংহের তারাকান্দায় উত্তর জেলা বিএনপির জনসভায় শনিবার (২২ফেব্রুয়ারি/২৫) বক্তব্য রাখছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান। তিনি বলেন ‘বাবারা, যদি নতুন দল করো, তাহলে মাঠে আইসা করো। সিংহাসনে থাইক্যা কিংস পার্টি করলে দেশের মানুষ মেনে নেবে না। যারা তোমাদের পেছনে মদদ দিচ্ছে, আফগানিস্তান, সিরিয়ার মতো যারা দেশকে পদদলিত করে রাখতে চায়, দেশের মাটিতে তা কখনো সম্ভব হবে না।’
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফজলুর রহমান এসব কথা বলেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ও দ্রুত নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে তারাকান্দা উপজেলার নতুন বাজার এলাকার একটি মাঠে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
৬-৭ মাস ধরে বিএনপির প্রতি অবিচার হচ্ছে দাবি করে ফজলুর রহমান বলেন, ‘এখন নির্বাচন হলে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিএনপি জয়ী হবে। কিন্তু সেই বিএনপিকে ঠেকাতে ষড়যন্ত্র চলছে। আর যারা এ কাজটি করছে, গত ২০ বছর তারা আমাদের নেত্রীর আঁচলতলে ছিল। মুক্তিযুদ্ধ হলো দেশের মা। সেই যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন মেজর জিয়া। সেই মুক্তিযুদ্ধকে যারা পদদলিত করতে চায়, তাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আমরা জিতেছিলাম, আপনারা পরাজিত হয়েছিলেন।
জামায়াতে ইসলামীর উদ্দেশে ফজলুর রহমান আরও বলেন, ‘বেইমান, মিরজাফর ও ষড়যন্ত্রকারীরা হেরে যাবে। ইসলামের নামে ব্যবসা করে দেশের মানুষকে ভোলাতে পারবেন না। ইসলামকে বিক্রি করে রাজনীতি করতে আইসেন না। বেডাগিরি করতে চাইলে নিজের মার্কা নিয়ে আসেন। ১০ শতাংশ ভোট পাইলে স্যালুট দিব। ইসলাম নিয়ে যারা ব্যবসা করে, দেশের মানুষ তাদের ভোট দিবে না।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা ইউনূস সাহেবকে বলে দিতে চাই, কার পক্ষে দেশের জনগণ আছে, তার জন্য নির্বাচন দরকার। স্থানীয় নির্বাচনের জন্য কী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রয়োজন আছে? তাহলে আপনারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন কেন করতে চাইছেন? শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। হাসিনাকে তাড়াইছি, এখন প্রথমে হবে জাতীয় নির্বাচন, এটি কি ইউনূস সাহেব বোঝেন না।’
ফজলুর রহমান বলেন, ‘আজ থেকে ১০ বছর আগে তারাকান্দায় অমানুষের রাজত্ব ছিল। নির্বাচনী সভায় এসে রক্তাক্ত হয়েছিলাম। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনা ওয়াদা ভঙ্গ করে দিনের ভোট রাতে করল। নিশিরাতের ভোটে এমপি-মন্ত্রী হলো। হাসিনা দেশকে শেষ করল। ২০২৪ সালে হাসিনা ডামি ইলেকশন করছে। উনি এত ক্ষমতাশালী মনে করতেন যেন চৌঠা আসমানে উঠে গেছে। ১৫ বছরের শাসনে দেশের মানুষকে অত্যাচার করেছেন। দিনের পর পর দিন মানুষ জেল-জুলুম খেটেছেন। শত শত মামলা মাথায় নিয়ে বিএনপি নেতারা ঘুরে বেড়িয়েছেন। ঢাকা শহরে গিয়ে রিকশা ঠেলেছেন। তারপরও দল ছাড়েননি। যেখানেই বিএনপির মিছিল দেখেছেন, সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। জেলে থাকায় মা মরেছেন, বাবা মরেছেন, দেখতে পারেননি। বিএনপি নেতা-কর্মীর মতো জেল আর কখনো কেউ খাটেননি। তারপরও বিএনপির একজন কর্মীও কমেনি।’
বেলা চারটায় সমাবেশ শুরুর আগে জেলার হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, ফুলপুর, তারাকান্দা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইল উপজেলা বিএনপি, পৌর বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম এনায়েতউল্লাহ কালাম। উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কোনো টালবাহানা ছাড়া দ্রুত নির্বাচন দিতে হবে। দল বড় করার জন্য আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করা হবে না। যারা এটি করতে চাইবে, তাদের প্রতিহত করা হবে।