গৌরীপুরে শারদীয় দুর্গোৎসবের মণ্ডপ ভাংচুরের ঘটনায় ১ জন আটক
- আপডেট সময় : ০৪:৫২:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৭ বার পড়া হয়েছে
মোখলেছুর রহমান, গৌরীপুর প্রতিদিন : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পৌর শহরের গোবিন্দবাড়ি জিউর মন্দিরে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর/২০২৪) ভোরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইয়াসিন (১৭) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। ইয়াসিন উপজেলাধীন সদর ইউনিয়নের গজন্দর গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে।
গোবিন্দবাড়ি জিউর মন্দির এলাকার লিটন চন্দ্র দাসের স্ত্রী ডলি রানী দাস জানান, বৃহস্পতিবার ভোরে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হই। এ সময় অপরিচিত এক ছেলেকে প্রতিমা ভাঙতে দেখে চিৎকার শুরু করি। আরেক প্রত্যক্ষদর্শী গৌরাঙ্গ চন্দ্র বিশ্বশর্মার পুত্র গোবিন্দ চন্দ্র বিশ্বশর্মা বলেন, আমি এসে দেখি একটি ছেলে প্রতিমা ভাঙছে। আমাকে দেখেই একটি প্রতিমা নিয়ে নাচানাচি শুরু করে ও রাস্তার দিকে চলে যেতে থাকে। পরে আরও কয়েকজনের সহায়তায় তাকে আমরা আটক করি।
স্থানীয় ও পূজামণ্ডপ কমিটির সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গৌরীপুর মধ্যবাজার পূজামণ্ডপ কমিটির উদ্যোগে পৌর শহরের মধ্যবাজার এলাকায় অস্থায়ী মণ্ডপ তৈরি করে প্রতিবছর শারদীয় দুর্গোৎসব আয়োজন করা হয়।
এ প্রসঙ্গে মধ্যবাজার পূজামণ্ডপ কমিটির সভাপতি রনজিৎ চন্দ্র সাহা বলেন, দুর্গোৎসবের আগে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিমা ঠিক করা যাবে কিনা এ বিষয়ে কারিগরদের সাথে কথা বলতে হবে।
গৌরীপুর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন সরকার বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে ইয়াসিনের মা মিনা আক্তার বলেন, ইয়াসিন মানসিক প্রতিবন্ধী। সে সরকারি ভাতা পায়। গত বুধবার সে বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর তার খোঁজ পাচ্ছিলাম না। বৃহস্পতিবার সকালে খোঁজাখুঁজির সময় জানতে পারি সে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় আটক হয়েছে। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মাহফুজ ইবনে আইয়ুব জানান, ইয়াসিন সমাজসেবা দপ্তর থেকে প্রতিবন্ধী ভাতাভোগী।
অপরদিকে প্রতিমা ভাঙচুরের খবর পেয়ে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার মো. আজিজুল ইসলাম, র্যাব-১৪ এর কোম্পানি কমান্ডার শামুজ্জামান, গফরগাও সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরোজা নাজনীন, গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাকিল আহমেদ ও গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা মাযহারুল আনোয়ার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মির্জা মাযাহারুল আনোয়ার বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ইয়াসিন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনা পুলিশ তদন্ত করছে। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শাকিল আহমেদ বলেন, প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। মন্দির ও মণ্ডপগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
এছাড়াএ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানান।